মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কে ‘ঈগল’ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান তাঁর কার্যালয়ের শহিদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবক ওসমান সরওয়ার ও সমর্থক ইউনুসুর রহমান’কে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা নির্বাচন অফিসার সহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর পক্ষে লিমন, বাবুল, ফারুক, শাহাবুদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বস্ত সুত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর পর কক্সবাজার-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নতুন চুড়ান্ত তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে সংশোধিত চুড়ান্ত তালিকায় মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ৬ জন। এরমধ্যে, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী, (প্রতীক : ঈগল)। বাকী ৫ জনই দলীয় প্রার্থী। তাঁরা হলেন-কল্যাণ পার্টির আবদুল আউয়াল মামুন : (প্রতীক-হাতঘড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ ইব্রাহীম : (প্রতীক-টেলিভিশন), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক : (প্রতীক- লাঙ্গল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান ভুলু : (প্রতীক-কুঁড়েঘর) এবং আওয়ামী লীগের সাইমুম সরওয়ার কমল : (প্রতীক-নৌকা)।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল এর নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ কমিশন ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি বৈধ ঘোষণা করেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ২৯৬, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি রিটার্নিং অফিসার ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান গত ১৫ ডিসেম্বর বাছাইয়ের সময় ১% ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকার অভিযোগে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করে দেন।

রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত আপীলের সময় অতিবাহিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর বাতিল করা
মনোনয়নপত্রটির বিরুদ্ধে আপীল করার অনুমতি চেয়ে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্টে বিচারপতি এ.টি.এম সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো: বশির উল্লাহ’র বেঞ্চ আবেদনটি শুনানি করে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপীল আবেদনটি গ্রহন করে শুনানি পূর্বক নিষ্পত্তি করার জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এ নির্দেশনা মোতাবেক ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপীল আবেদন করলে কমিশন বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) শুনানী শেষে রিটার্নিং অফিসারের বাতিল করা মনোনয়নপত্রটি বৈধ ঘোষণা করে তাঁকে প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিকেল ৪ টা অর্থাৎ অফিস সময়ের পরে আসার অভিযোগে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি রিটার্নিং অফিসার গ্রহণ করেননি। রিটার্নিং অফিসারের এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে রীট পিটিশন দায়ের করেন।

পিটিশনটি শুনানী শেষে মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করার জন্য হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গত ১২ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসার মুহম্মদ শাহীন ইমরান ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি বাছাই করে বাতিল করা হয়।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নির্বাচনী মাঠে ফেরত আসা ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বনান্তিকা সেগুন বাগিচা এলাকার অ্যাডভোকেট রমজান আলী’র পুত্র। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী। কক্সবাজার সদর উপজেলায় প্রথম ব্যারিস্টার অব ল’ ডিগ্রি (ব্যারিস্টার) অর্জন করে মিজান সাঈদ ইতিহাস গড়েন।

এদিকে, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ ঈগল প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডি-তে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, “কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁহবাসী আমাকে আপনাদের একজন সেবক হিসেবে কক্সবাজারের উন্নয়নে, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে দোয়া ও ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আমি আপনাদের কাছে ঈগল মার্কায় ভোট, দোয়া ও সমর্থন চাই।”

প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি।